বাসাবো-মাদারটেক হয়ে দক্ষিণগাঁও-নন্দীপাড়ায় যাতায়াতের মূল প্রবেশপথ নন্দীপাড়া ব্রিজ। বর্তমানে অন্য অনেক বিকল্প পথে এই এলাকায় যাতায়াত করা গেলেও এটাই এখনো মূল পথ, এটাই সবচেয়ে ব্যস্ততম রাস্তা। জিরানী খালের ওপর বহু বছর আগে এই অংশে প্রথমে বাঁশের সাঁকো তারপর কাঠের ব্রিজ তৈরি করে রাস্তার সংযোগ করা হয়েছিল। আশির দশকে কাঠের ব্রিজ ভেঙে তৈরি করা বর্তমানের এই পাকা ব্রিজটি তখন হাঁটাচলা এবং হালকা যান চলাচলের উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছিল। বর্তমানে যে ওজনের, যে উচ্চতার এবং যে পরিমাণ ভারী যানবাহন চলাচল করে সেটা মাথায় রেখে এই ব্রিজ তৈরি হয়নি। ফলে অত্যধিক লোডের কারণে ব্রিজটি এখন চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। দুইপাশের রেলিং ভেঙে গিয়ে জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে ব্রিজটি। সম্প্রতি সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর দুইপাশের রাস্তা প্রশস্ত হওয়ার কারণে ব্রিজটি সরু এবং রাস্তার সাথে প্রায় বেমানান হয়ে গেছে। ফলে দুইপাশের গাড়ি ব্রিজটিতে এসে চাপে পড়ে যায়। তারওপর ব্রিজের ওপর দুইপাশেই যাত্রী নিতে সারাক্ষণ অটোরিকশা দাঁড়িয়ে থাকে। ব্রিজে ওঠানামার পথেও অটোস্ট্যান্ড। চরম জ্যামেও অটোচালকরা সাইড না দিয়ে নির্বিকার বসে থাকে। ফলে ২৪ ঘন্টাই ব্রিজ ঘিরে গাড়ির জটলা লেগেই থাকে। মাঝেমধ্যে পথচারীদের হেঁটে যাওয়ার রাস্তাটা পর্যন্ত থাকে না। চাইলেই যে এই গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সেতুটি যানজট মুক্ত রাখা যায়, সেটা ৫ আগস্ট পরবর্তী কয়েকদিন ছাত্র-জনতা ট্রাফিক কন্ট্রোল করে প্রমাণ করেছিল অটো স্ট্যান্ডে নন্দীপাড়া ব্রিজ যানজট মুক্ত । স্বেচ্ছাসেবক সেই ট্রাফিক টিম চলে যাওয়ার পর যেই লাউ সেই কদু। আবার আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে না বলে বলা উচিত, অবস্থা আগের চেয়ে আরো ভয়াবহ হয়েছে। অনেকে আবার চাঁদাবাজির জন্য মুখর হয়ে বসে আছে। তাদের জন্য অটোচালকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস কারও নেই। করলেই স্ট্যান্ড পরিচালনার দায়িত্বে নিতে চাই যারা তাদের মদদপুষ্ট টোকাই-মাস্তানদের হাতে নাজেহাল হতে হয়। এটাই হয়ত নিয়ম। এই নিয়ম মেনে নিয়ে কেউ টু শব্দটি পর্যন্ত করে না।
ব্রিজ সংস্কার এবং যানজট নিরসনের দাবি নিয়ে ৭৩ এবং ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলরদের সাথে বছর খানেক আগে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তারা জানেনই না, এটা কোন ওয়ার্ডের অন্তর্গত। একপাশের রেলিং নাকি ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে পড়েছে আর অন্যপাশ ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে। তাই নন্দীপাড়া ব্রিজ নিয়ে তাদের কারো কোনো মাথাব্যথা ছিল না, কেউ এ নিয়ে কিছু করার তাগিদও অনুভব করেননি। নন্দীপাড়া মানুষ এ অটো স্ট্যান্ড ও যানজট থেকে মুক্তি চায় তাই বলা যায়
চিনের দুঃখ হোয়াংহো আর নন্দীপাড়া-দক্ষিণগাঁওবাসীদের দুঃখ এই নন্দীপাড়া ব্রিজ। ব্রিজটির প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং যানজট নিরসনের স্থায়ী উদ্যোগ নেয়া না হলে সাধারণ জনগণ হয়তো অচিরেই রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে। আশা করি, অতিদ্রুত যথাযথ কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হবেন।